সাত মাস পেঁপেভর্তা ছাড়া কিছু খাইনি- নাট্যকার ও অভিনেতা বৃন্দাবন দাসের স্ত্রী অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি
খুশি লিখেছেন-আমরা দুজনই মোটামুটি বেশ সচ্ছল পরিবারের ছিলাম। অন্তত মাছ-মাংস ছাড়া ভাত খাইনি কোনো দিন। আমাদের সংসারের একদম শুরুর দিকে মাত্র দুই হাজার টাকা বেতনে চাকরি করত বৃন্দাবন।
খুশি জানান, ১৪০০ টাকা ঘরভাড়া, বাকি ৪০০ টাকা পাশের মুদি দোকানে জমা দিয়ে মাসের চাল আর তেল নুন নিতাম। ২০০ টাকা হাত খরচ রাখতাম থিয়েটারের জন্য।
জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী বলেন, বেশিরভাগ সময় রিহার্সেলে হেঁটে যেতাম। ফেরার পথে রিকশায়। মুদি দোকানে তখন তরকারি বলতে ছিল আলু আর পেঁপে। যেহেতু পেঁপের দাম ছিল কম (২ টাকা কেজি), তাই একমাত্র পেঁপেই নিতাম।
‘আমার মনে আছে- সাত মাস পেঁপেভর্তা ছাড়া কিছু খাইনি। হঠাৎ একদিন অফিস থেকে ফিরে বৃন্দাবন খুবই বেদনার্তভাবে কান্না করতে লাগল। কান্নার ব্যাকুলতা বোঝানো যাবে না। এখনও মনে হলে আমার চোখ ভিজে যায়!
সেই সঙ্গে এই কথা- ‘তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও…’। আমি যতই বলি কী হয়েছে, সে একই কথা বলে আর কাঁদে!
অনেক পরে শান্ত হলে জানলাম- সে যেহেতু তার বসের পিএ ছিল, বসের একটা লেখা পৌঁছে দেয়ার জন্য সে মেট্রোপলিটন হোটেলের একটা সেমিনারে গিয়েছিল। লাঞ্চ টাইম হওয়ায় তাকে বসের পক্ষে লাঞ্চ খেতে হয়েছে।
সে খাবারে মাছ-মাংস দুই ছিল! যেহেতু আমরা ৬-৭ মাসের বেশি মাছ-মাংস খেতে পারি না অর্থ সংকটের জন্য; সে কারণে এই বিলাসী খাবার খেয়ে সে নিজেকে ক্ষমা করতে পারে নাই…।’
স্বামীকে উদ্দেশ্য করে খুশি আরও লিখেন- ‘বৃন্দাবন, পরবর্তী জীবনের দিনগুলোর সীমাহীন না পাওয়া চোখ বন্ধ করে পাড়ি দিতে পেরেছি, এমন কিছু দরদি সত্যের জন্য।
তুমি নাই, অথচ তোমার জন্ম তারিখ আছে, এমন দিন যেন আমার জীবনে দেখতে না হয়। তোমার দীর্ঘায়ু আমার আজ একমাত্র শুভাশিষ। শুভ জন্মদিন….।’